![](https://mubinkhan.net/wp-content/uploads/2021/07/khoto-0-768x400.png)
কবিতারা আসে না কাছে, জানোই তো
খুব ফাঁকিবাজও হয়েছে আজকাল
সেদিন দেখি পাড়ায় উদাসীন হাঁটছে
এরপর খুব করে চেপে ধরেছি যখন-
তোমার মতো করেই দৃষ্টি ভরা বিরক্তি
আর তাচ্ছিল্যে ডাগর চাউনিতে বলে;
ঠিক তোমার মতো করেই বলে,
কবি নই বলেই নাকি আসে না কাছে।
বলে, তুমি ছাড়া নাকি আসতে নেই কাছে;
তোমার লুকোচুরি খেলার সময়টাতে
ভিড় করে আসত কবিতারা, থাকত বসে
বলাবলিতে কুর্নিশ আর আকুতি মেশাত।
‘লিখছ না কেন!’ তাগিদে অস্থির করত
এরপর প্রগাঢ় আবেগে ফিসফিস বলত,
দেখ দেখ! দু চোখ ভরে যে আছে, এ সুখ
তাকে দেখতে পেলেই জড়ো হয় এমন সুখ।
ঠোঁটের স্মিত হাসি বুঝি চেনো নি এখনও!
তার সঙ্গে যখন চলে তোমার বাক্যালাপ
তখনই আনন্দ-হাসি, স্মিত কিন্তু প্রাণোচ্ছল
বুকে ওটা রামধনু নয়, ‘মাল্টিকালার কষ্ট।’
শুনে আমি তখন বর্ণে বর্ণে আঁকতে লাগি-
এই যে গাঢ় নীল রঙটা দেখছ, এটা তুমিই;
কৈশোরের, মনে নেই! ভুলবে কি করে!
তোমার জীবনের গাঁথুনি যে! -বলি আমি
তোমার বুকে কেন? সবিস্ময় কন্ঠ তোমার
হেসে বলে উঠি, দিয়েছিলে যে, ভুলেছ বুঝি!
আমার নীলেরাও যে ওখানেই, দেখ নি?
মিশে গেছে তোমার সঙ্গে, বলে ফের হাসি।
কবিতারা তখন নীরব, তুমি সরব,
কৌতুহলে দু চোখে উপচায় প্রশ্ন-
ওই যে গাঢ় লাল রঙটা? ওটা কেন?
শুনে কৌতুকে হেসে ওঠে কবিতারাও।
আমার রাগ হয়, এভাবে ভুলতে আছে?
কি সযত্ন তুলিতে ক্ষতটা লালে রাঙালে
এরপর ত্রস্ত আঁচড়ে ছোপ ছোপ হলুদ
গভীর মনোযোগে বোলাতে বোলাতে বলছিলে-
বলেছিলে, ক্ষতটা নাকি এতে খুব করে
টাটকা আর দগদগে দেখাবে; ভুলে গেছ!
বেগুনী? ওই তো লাল-নীলের ঠিক মাঝখানে
আমার ক্ষতর সঙ্গে মিশেছে কেমন দেখেছ!
ওই তো কমলা, ওখানটা কমলা কেন জানো?
ওখানে তোমার প্রস্থানের দৃপ্ত পায়ের ছাপ
তোমায় ভাবলেই খুব টনটনে ব্যথা এখনও
স্মৃতির পুঁজ জমে জানায় নিজের অস্তিত্ব।
আর ওই যে দেখছ গাঢ় সবুজ, ওই তুমি;
তোমার সকল প্রাণচঞ্চল কথোপকথন,
ওখানেই আছে এখনও সমান প্রবলতায়
আমার সুখের একমাত্র ঠিকানা হয়ে।
সবুজে দাঁড়িয়ে ওপরে তাকালেই আসমানী
ওই আসমান সমান স্বপ্ন আমার, তোমারও
সন্ধ্যা হলে সূর্যোদয়, তারপর লক্ষ তারা
চাঁদ আর জ্যোৎস্নায় আদিম আমরা।